মধু
মধুর উপকারিতা
মধু একটি খুব উপকারী খাদ্য, পন্য ও ঔষধ। জন্মের পর নানা দাদীরা মখে মধু দেয় নাই এমন লোক খুঁজে
পাওয়া কঠিন। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে, মিষ্টি হিসেবে, চিকিৎসা ও সৌন্দর্য চর্চা সহ
নানাভাবে মধুর ব্যবহার করে আসছে। শরীরের সুস্থতায় মধুর উপকারিতা অনেক।
মধুর ভৌত বৈশিষ্ট্যঃ
বাংলাদেশের জাতীয় মধু বোর্ডের সংজ্ঞা
অনুযায়ী,
"মধু হল একটি বিশুদ্ধ পদার্থ যাতে পানি বা অন্য কোন
মিষ্টকারক পদার্থ মিশ্রিত করা হয় নাই।" মধু চিনির চাইতে অনেক গুণ মিষ্টি।
তরল মধু নষ্ট হয় না, কারন এতে চিনির উচ্চ ঘনত্বের কারণে
প্লাজমোলাইসিস প্রক্রিয়ায় ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। প্রাকৃতিক বায়ুবাহিত ইস্ট
মধুতে সক্রিয় হতে পারে না, কারন মধুতে পানির পরিমাণ খুব
অল্প। প্রাকৃতিক, অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে মাত্র ১৪% হতে ১৮%
আর্দ্রর্তা থাকে। আর্দ্রর্তার মাত্রা ১৮% এর নিচে যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ মধুতে কোন জীবাণু বংশ বৃদ্ধি করতে পারে না। পাস্তুরাইয্ড মধুতে
মধুর প্রাকৃতিক ঔষধি গুণাবলী হ্রাস পায়।
মধুতে যা বিদ্যমানঃ
মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের
পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে
৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫-১২
শতাংশ মন্টোজ। আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮
শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনকাইম। এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই। ১০০ গ্রাম মধুতে থাকে
২৮৮ ক্যালরি।
আছে যত ধরনের মধুঃ
বিভিন্ন ফুল থেকে মধু হয় যেমনঃ সরিষা ফুল, লিচু, সুন্দর বন, কালজিরা
থেকে আহরিত মধু। এ ছাড়া রয়েছে ধনিয়া ফুল, গুজি তিল ও
তৃষি থেকেও উৎপাদিত হয় মধু। প্রায় সব গুলার গুনাগুন একই।
সবচেয়ে সেরা মধুঃ
নিউজিল্যাণ্ডের মানুকা হানি বাজারে প্রাপ্য
সকল মধুর চেযে বেশী ঔষধি গুণ সম্পন্ন গণ্য করা হয়। মানুকা নামীয় এক প্রকার ঝোপ
জাতীয় উদ্ভিদের ফুল থেকে উৎপন্ন মধু "মানুকা হানি" নামে পরিচিত।
মধুর ব্যাবহারঃ
আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার জনক নামে পরিচিত
হিপ্পোক্রেটস শরীরের প্রদাহ ও সিফিলিস রোগের চিকিৎসায় মধু ব্যবহার করতেন বলে কথিত
আছে। ২ হাজার বছর আগেও যখন চিকিৎসা বিজ্ঞান আজকের মতো এতটা উন্নত ছিল না, তখনও মানুষ জানত মধুর কি গুণ! গ্রিক অ্যাথলেটরা অলিম্পিকে অংশ গ্রহণের
আগে প্রচুর পরিমাণ মধু সেবন করত শক্তি বাড়ানোর জন্য। তাদের ধারণা ছিল, মধু খেলে তাদের পারফরমেন্সের উন্নতি হবে। কারণ মধুতে রয়েছে
উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ যা যকৃতে গ্রাইকোজেনের রিজার্ভ (যে ফর্মে গ্লুকোজ
লিভারে সঞ্চিত হয়) গড়ে তোলে।
খাটি মধুর বৈশিষ্ট্যঃ
খাটি মধুতে কখনো কটু গন্ধ থাকে না।
মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক কোনো
বিষাক্ত উপাদান প্রাকৃতিক গাছে থাকলেও তার প্রভাব মধুতে থাকে না।
মধু সংরক্ষণে কোনো পৃজারভেটিভ ব্যবহৃত হয় না।
কারণ মধু নিজেই পৃজারভেটিভ গুণাগুণ সম্পন্ন পুষ্টিতে ভরপুর খাদ্য।
মধু উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত,
নিষ্কাশন, সংরক্ষণ ও বোতলজাতকরণের সময়
অন্য কোনো পদার্থের সংমিশ্রণ প্রয়োজন হয় না।
খাটি মধু পানির গ্লাসে ড্রপ আকারে ছাড়লে তা
সরাসরি ড্রপ অবস্থায়ই গ্লাসের নিচে চলে যায়।
মধুর উপকারিতাঃ
মধুর উপকারিতার কথা লিখে শেষ করা যাবে না।মধুর
নানাবিধ উপকারিতা নিম্নে প্রদত্ত হল,
শক্তি প্রদায়ীঃ
মধু ভালো শক্তি প্রদায়ী খাদ্য। মধু তাপ ও
শক্তির ভালো উৎস। মধু দেহে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।
হজমে সহায়তাঃ
এতে যে শর্করা থাকে তা সহজেই হজম হয়। কারণ
এতে যে ডেক্সট্রিন থাকে তা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং তাৎক্ষণিক ভাবে ক্রিয়া
করে। পেটরোগা মানুষদের জন্য মধু বিশেষ উপকারি।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ
মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ১ চা চামচ
খাঁটি মধু ভোরবেলা পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতা এবং অম্লত্ব দূর হয়।
রক্তশূন্যতায়ঃ
মধু রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে বলে
এটি রক্তশূন্যতায় বেশ ফলদায়ক।কারণ এতে থাকে খুব বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ।
ফুসফুসের যাবতীয় রোগ ও শ্বাসকষ্ট নিরাময়েঃ
বলা হয়, ফুসফুসের
যাবতীয় রোগে মধু উপকারী। যদি একজন অ্যাজমা (শ্বাস কষ্ট) রোগীর নাকের কাছে ধরে
শ্বাস টেনে নেয়া হয় তাহলে সে স্বাভাবিক এবং গভীর ভাবে শ্বাস টেনে নিতে পারবেন।
কেউ কেউ মনে করেন, এক বছরের পুরনো মধু শ্বাস কষ্টের
রোগীদের জন্য বেশ ভালো।
অনিদ্রায়ঃ
মধু অনিদ্রার ভালো ওষুধ। রাতে শোয়ার আগে এক
গ্লাস পানির সঙ্গে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে এটি গভীর ঘুম ও সম্মোহনের কাজ
করে।
যৌন দুর্বলতায়ঃ
পুরুষদের মধ্যে যাদের যৌন দুর্বলতা রয়েছে
তারা যদি প্রতিদিন মধু ও ছোলা মিশিয়ে খান তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
প্রশান্তিদায়ক পানীয়ঃ
হালকা গরম দুধের সঙ্গে মিশ্রিত মধু একটি
প্রশান্তিদায়ক পানীয়।
মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায়ঃ
মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য রক্ষায় মধু ব্যবহৃত
হয়। এটা দাঁতের ওপর ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। দাঁতে পাথর জমাট বাঁধা রোধ
করে এবং দাঁত পড়ে যাওয়াকে বিলম্বিত করে। মধু রক্তনালিকে সম্প্রসারিত করে দাঁতের
মাড়ির স্বাস্থ্য রক্ষা করে। যদি মুখের ঘায়ের জন্য গর্ত হয়। এটি সেই গর্ত ভরাট
করতে সাহায্য করে এবং সেখানে পুঁজ জমতে দেয় না। মধু মিশ্রিত পানি দিয়ে গড়গড়া
করলে মাড়ির প্রদাহ দূর হয়।
পাকস্থলীর সুস্থতায়ঃ
মধু পাকস্থলীর কাজকে জোরালো করে এবং হজমের
গোলমাল দূর করে। এর ব্যবহার হাইড্রোক্রলিক এসিড ক্ষরণ কমিয়ে দেয় বলে অরুচি, বমিভাব, বুক জ্বালা এগুলো দূর করা সম্ভব হয়।
দেহে তাপ উৎপাদনেঃ
শীতের ঠান্ডায় এটি দেহকে গরম রাখে। এক অথবা
দুই চা চামচ মধু এক কাপ ফুটানো পানির সঙ্গে খেলে শরীর ঝরঝরে ও তাজা থাকে।
পানিশূন্যতায়ঃ
ডায়রিয়া হলে এক লিটার পানিতে ৫০ মিলিলিটার
মধু মিশিয়ে খেলে দেহে পানিশূন্যতা রোধ করা যায়
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেঃ
চোখের জন্য ভালো।গাজরের রসের সাথে মধু মিশিয়ে
খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
রূপচর্চায়ঃ
মেয়েদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে মাস্ক হিসেবে
মধুর ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। মুখের ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধির জন্যও মধু ব্যবহৃত হয়।
ওজন কমাতেঃ
মধুতে নেই কোনো চর্বি। মধু পেট পরিষ্কার করে, মধু ফ্যাট কমায়, ফলে ওজন কমে।
হজমে সহায়তাঃ
মধু প্রাকৃতিক ভাবেই মিষ্টি। তাই মধু সহজে হজম
হয় এবং হজমে সহায়তা করে।
গলার স্বরঃ
গলার স্বর সুন্দর ও মধুর করে।
তারুণ্য বজায় রাখতেঃ
তারুণ্য বজায় রাখতে মধুর ভূমিকা অপরিহার্য।
মধু এন্টি অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের রং ও ত্বক
সুন্দর করে। ত্বকের ভাঁজ পড়া ও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে।শরীরের সামগ্রিক শক্তি
বাড়ায় ও তারুণ্য বাড়ায়।
হাড় ও দাঁত গঠনেঃ
মধুর গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ক্যালসিয়াম।
ক্যালসিয়াম দাঁত, হাড়, চুলের গোড়া শক্ত রাখে, নখের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি
করে, ভঙ্গুরতা রোধ করে।
রক্তশূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ
মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, যা রক্তশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
আমাশয় এবং পেটের পীড়া নিরাময়েঃ
পুরনো আমাশয় এবং পেটের পীড়া নিরাময়সহ
নানাবিধ জটিল রোগের উপকার করে থাকে।
হাঁপানি রোধেঃ
আধা গ্রাম গুঁড়ো করা গোলমরিচের সাথে সমপরিমাণ
মধু এবং আদা মেশান। দিনে অন্তত তিন বার এই মিশ্রণ খান। এটা হাঁপানি রোধে সহায়তা
করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়ঃ
দু'চামচ মধুর
সাথে এক চামচ রসুনের রস মেশান। সকাল সন্ধ্যা দু'বার এই
মিশ্রণ খান। প্রতিনিয়ত এটার ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপ কমায়। প্রতিদিন সকালে খাবার এক
ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত।
রক্ত পরিষ্কারকঃ
এক গ্লাস গরম পানির সাথে এক বা দুই চামচ মধু ও
এক চামচ লেবুর রস মেশান। পেট খালি করার আগে প্রতিদিন এই মিশ্রন খান। এটা রক্ত
পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তাছাড়া রক্তনালী গুলোও পরিষ্কার করে।
রক্ত উৎপাদনে সহায়তাঃ
রক্ত উৎপাদনকারী উপকরণ আয়রন রয়েছে মধুতে।
আয়রন রক্তের উপাদানকে (আরবিসি, ডব্লিউবিসি, প্লাটিলেট) অধিক কার্যকর ও শক্তিশালী করে।
হৃদরোগেঃ
এক চামচ মৌরি গুঁড়োর সাথে এক বা দুই চামচ
মধুর মিশ্রণ হৃদরোগের টনিক হিসেবে কাজ করে। এটা হৃদপেশিকে সবল করে এবং এর
কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায়ঃ
মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় এবং
শরীরের ভেতরে এবং বাইরে যে কোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও যোগান
দেয়। মধুতে আছে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী উপাদান, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে। ২০০৭ সালে সিডনি
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যায়, সুপারবাগ
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধে মধু অত্যন্ত কার্যকর। বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণে
বিভিন্ন রোগ প্রায়ই দেহকে দুর্বল করে দেয়। এসব ভাইরাস প্রতিরোধে মধু খুবই
কার্যকর।
জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইঃ
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মধুতে রয়েছে
উচ্চ শক্তি সম্পন্ন অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল এজেন্ট। এই এজেন্ট শরীরের ক্ষতিকর রোগ
জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ব্যথা নিরাময়েঃ
আপনার শরীরের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা? প্রচুর বাতের ওষুধ খেয়েও কোনো ফল পাননি? মধু
খান। যে অবাঞ্ছিত রসের কারণে শরীরে বাতব্যামোর জন্ম, সে
রস অপসারিত করবে মধু। আপনার বাত সেরে যাবে।
গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তিঃ
হজম সমস্যার সমাধানেও কাজ করে মধু। একটি
গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে
মুক্তি পেতে একজন ব্যক্তি দিনে তিন বেলা দুই চামচ করে মধু খেতে পারে।
মধু খেলে বুদ্ধি বাড়েঃ
মধু যে শুধু কায়িক শক্তি বাড়ায়, তা নয়। আপনি প্রতিদিন রাতে শোয়ার আগে এক চামচ মধু খাবেন, ঘুমানোর আগে এক চামচ মধু মস্তিষ্কের কাজ সঠিক ভাবে চালাতে সাহায্য করে
ফলে আপনার মস্তিষ্কের শক্তি তথা বুদ্ধির জোর বেড়ে যাবে। যে কোনো কাজে কর্মে আপনার
মগজ আগের চেয়ে বেশি খেলবে। যাদের মাথা খাটিয়ে কাজ করতে হয়, তাদের জন্য মধু এনে দেবে নতুন উদ্যম ও সৃষ্টিশীলতা। মনে রাখবেন,
আপনি ঘুমিয়ে পড়লেও আপনার মস্তিষ্ক কিন্তু জেগে থাকে। সুতরাং
তখনও তার শক্তি দরকার। আর এ শক্তির ভালোই যোগান দেয় মৌমাছির চাক ভেঙে পাওয়া এই
প্রাকৃতিক মধু। আপনার লিভারে মধু থেকে পাওয়া ফলজ শর্করা বা ফ্রুকটোজ নামের
পদার্থটিই মস্তিষ্কের জ্বালানি হিসেবেই কাজ করে থাকে। মানুষের লিভারে শক্তি
সংরক্ষণ করে এবং রাতব্যাপি মস্তিষ্কে শক্তি সরবরাহ করে থাকে।
ঠান্ডা দূর করে মধুঃ
মধু নিয়মিত খেলে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগার
প্রবণতা দূর হবে। চা, কফি ও গরম দুধের সঙ্গে মধু
মিশিয়ে খেলে হাঁচি, কাঁশি, জ্বর
জ্বর ভাব, জ্বর, গলা ব্যথায়,
টনসিল, নাক দিয়ে পানি পড়া, জিহ্বার ঘা (ঠান্ডাজনিত) ভালো হয়। সমপরিমাণ আদারস এবং মধুর মিশ্রণ
কাশির সাহায্যে শ্লেষ্মা বের করে ফেলার একটি সহায়ক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এটি
ঠান্ডা, কাশি, কণ্ঠনালির ক্ষত,
নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি থেকে দ্রুত পরিত্রাণ দেয়।
পেনসিলভানিয়া স্টেট কলেজ অব মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এক চামচ মধু বিভিন্ন সর্দির ওষুধ থেকেও অনেক বেশি কার্যকর। মধুর এই
ঠাণ্ডা জনিত রোগনিরোধী গুণের কথা বলা হয়েছে এই গবেষণায়, যা কবিরাজি মতে আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত।
শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশেঃ
শিশুদের ছয় মাস বয়সের পর থেকে অল্প করে (তিন
চার ফোঁটা) মধু নিয়মিত খাওয়ানো উচিত। এতে তাদের পুরো দেহের বৃদ্ধি, মানসিক বিকাশ ভালো হবে। তবে শিশুকে মধু নিয়মিত খাওয়াতে হবে ঠান্ডা
ঋতুতে, গরমের সময় নয়। শিশুদের দুর্বলতা দূর করার জন্য
মধুতে রয়েছে জিংক ও ফসফরাস। বড়দের তুলনায় বাড়ন্ত শিশুদের (বিশেষ করে যারা
স্কুলে যায়) জন্য পরিমাণে মধু বেশি প্রয়োজন।
আয়ু বৃদ্ধিঃ
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নিয়মিত মধু ও সুষম খাবারে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা তুলনামূলক ভাবে বেশি
কর্মক্ষম ও নিরোগ হয়ে বেঁচে থাকে।
ক্ষত সারাতে মধুঃ
প্রাচীন কাল থেকে গ্রিস ও মিশরে ক্ষত সারাতে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ২০০৭ এ সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষত ও জখমের উপশমে মধু ডাক্তারী ড্রেসিং এর চেয়েও বেশী কার্যকর। অগ্নিদগ্ধ ত্বকের জন্যও মধু খুব উপকারী। আজকাল ছোটখাটো কাটাছেঁড়া সারাতেও মধুর ব্যবহারের কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক "ড. শোন ব্লেয়ার" বলেছেন, ক্ষতে ইনফেকশন সৃষ্টি হওয়া প্রতিরোধ করতেও ড্রেসিংয়ের সময় মধু মেশানো উচিত। ধরুন, আপনার শরীরের কোন অংশ কেটে গেল হাতের কাছে এ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট নেই। এবার বিকল্প হিসাবে আপনার ঘরের মধুটি আপনার কাজে আসতে পারে। মধু ব্যাকটেরিয়ার আক্রামণকেও ঠেকায়। এভাবে মধু আপনার ক্ষতে ইনফেকশন হতে দেবে না এবং ক্ষতটি ও দ্রুত সারিয়ে তুলবে। মধুর এমন মধুরতম ব্যবহার আর কি হতে পারে? কিন্তু কিভাবে ব্যবহার করবেন? এটা এবার জেনে নিন। প্রথমে ক্ষত স্থনটি ভাল করে ধুয়ে নিন। তারপর আলতো করে সেখানে পাস্তুরিত মধু লাগিয়ে নিন। এবার ব্যান্ডেজ দিয়ে জায়গাটা বেঁধে নিন। ব্যস, এভাবে দিনে তিনবার। ক্ষত সেরে যাবে। তাছাড়া দেহের ক্ষত এবং ফোঁড়ার ওপর মধু এবং চিনি চমৎকার কাজ করে থাকে। এটি যে কোনো ব্যথাকে প্রশমিত করে এবং জীবাণুনাশকের কাজ করে।
প্রাচীন কাল থেকে গ্রিস ও মিশরে ক্ষত সারাতে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ২০০৭ এ সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে অধিকাংশ ক্ষত ও জখমের উপশমে মধু ডাক্তারী ড্রেসিং এর চেয়েও বেশী কার্যকর। অগ্নিদগ্ধ ত্বকের জন্যও মধু খুব উপকারী। আজকাল ছোটখাটো কাটাছেঁড়া সারাতেও মধুর ব্যবহারের কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক "ড. শোন ব্লেয়ার" বলেছেন, ক্ষতে ইনফেকশন সৃষ্টি হওয়া প্রতিরোধ করতেও ড্রেসিংয়ের সময় মধু মেশানো উচিত। ধরুন, আপনার শরীরের কোন অংশ কেটে গেল হাতের কাছে এ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট নেই। এবার বিকল্প হিসাবে আপনার ঘরের মধুটি আপনার কাজে আসতে পারে। মধু ব্যাকটেরিয়ার আক্রামণকেও ঠেকায়। এভাবে মধু আপনার ক্ষতে ইনফেকশন হতে দেবে না এবং ক্ষতটি ও দ্রুত সারিয়ে তুলবে। মধুর এমন মধুরতম ব্যবহার আর কি হতে পারে? কিন্তু কিভাবে ব্যবহার করবেন? এটা এবার জেনে নিন। প্রথমে ক্ষত স্থনটি ভাল করে ধুয়ে নিন। তারপর আলতো করে সেখানে পাস্তুরিত মধু লাগিয়ে নিন। এবার ব্যান্ডেজ দিয়ে জায়গাটা বেঁধে নিন। ব্যস, এভাবে দিনে তিনবার। ক্ষত সেরে যাবে। তাছাড়া দেহের ক্ষত এবং ফোঁড়ার ওপর মধু এবং চিনি চমৎকার কাজ করে থাকে। এটি যে কোনো ব্যথাকে প্রশমিত করে এবং জীবাণুনাশকের কাজ করে।
No comments :
Post a Comment